
শিশু পাচার রোধে অবিলম্বে সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ না নিলে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে শিশু পাচার নিয়ে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
জাতিসংঘ মহাসচিবের শিশু-সহিংসতা বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ড. নাজাত মাল্লা মজিদ বলেছেন, আইন, নীতি এবং অনুশীলনে অনেক অগ্রগতি অর্জন করা সত্ত্বেও শিশু পাচার বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ অপরাধের মাত্রার সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিক্রিয়াগুলো যথেষ্ট দ্রুত গতিতে কার্যকর হচ্ছে না।
তিনি জানান, পাচারকারীরা দ্রুত নিজেদের অভিযোজন করছে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে কাজে লাগিয়ে দুর্বলতার পূর্ণ সুযোগ নিচ্ছে। অন্যদিকে প্রতিক্রিয়াগুলো সেই তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। তাই শিশু পাচার রোধে জরুরি এবং সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপগুলো বিলম্ব ছাড়াই বাস্তবায়ন করা উচিত।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের বিশেষ প্রতিনিধির বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে শিশু পাচারের অনুপাত উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে মেয়েদের মধ্যে। বিশ্বব্যাপী শনাক্ত হওয়া মানব পাচারের মধ্যে ৩৮ শতাংশই শিশু এবং প্রকৃত সংখ্যাটি সম্ভবত রিপোর্ট করা সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। বিভিন্ন কারণে শিশুদের শোষণ করা হয়। যৌন শোষণ, জোরপূর্বক শ্রম এবং জোরপূর্বক বিবাহসহ অন্যান্য ধরনের নির্যাতনের জন্য মেয়েদের ক্রমবর্ধমানভাবে পাচার করা হচ্ছে। ছেলেদের মূলত জোরপূর্বক শ্রম এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার জন্য পাচার করা হয়। বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে অপরাধীদের দ্বারা এই প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগানোর ঝুঁকি বেড়েছে।
বিশেষ প্রতিনিধি ড. নাজাত মাল্লা মজিদ বলছেন, যদি সদস্য রাষ্ট্র এবং অন্যান্য অংশীদাররা সক্রিয় প্রতিরোধ এবং টেকসই সুরক্ষায় বিনিয়োগ করে, পাচারকারী, ক্রেতা, বিক্রেতা এবং মধ্যস্থতাকারীদের দায়মুক্তি বন্ধ করতে জবাবদিহিতা জোরদার করে তাহলে শিশু পাচার বন্ধ করা সম্ভব। পাচার সম্পর্কে নীতিগত আলোচনায় শিশুদের সম্পৃক্ত করা তাদের সমর্থন এবং সুরক্ষার জন্য অপরিহার্য।