
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আজ শুক্রবার (২৮ মার্চ) রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার কম্পন অনুভূত হয়, যা দেশটির বিভিন্ন অবকাঠামোকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এর কিছুক্ষণ পর আরও একটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়, যার মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৪।
ভূমিকম্পের তীব্রতায় দেশটির মধ্যাঞ্চলের বাগো অঞ্চলের তুয়াঙ্গো শহরে একটি মসজিদ ধসে পড়েছে। এতে অন্তত তিনজন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুমার নামাজের সময় কম্পন শুরু হলে মসজিদটি মুহূর্তের মধ্যে ধসে পড়ে।
রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দুই প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, "আমরা প্রার্থনারত ছিলাম, তখনই প্রচণ্ড কম্পন অনুভূত হয়। মসজিদের ছাদ ধসে পড়ে, তিনজন ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।"
ভূমিকম্প শুধু মিয়ানমারেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। কম্পন অনুভূত হয়েছে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে। ব্যাংককে ভূমিকম্পের ধাক্কা এতটাই প্রবল ছিল যে, একটি নির্মাণাধীন ভবন ধসে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ভবনটি একেবারে খাড়াভাবে নিচে পড়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ধসে পড়া ওই ভবনে প্রায় ৫০ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। এর মধ্যে সাতজন দ্রুত বের হয়ে আসতে সক্ষম হলেও ৪৩ জন ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন। তাদের উদ্ধারে ব্যাপক অভিযান শুরু হয়েছে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে সাগাইং শহরের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ১০ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
গৃহযুদ্ধের মধ্যে থাকা দেশটিতে ভূমিকম্পের ফলে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি। তবে বার্তাসংস্থা এএফপি নেপিদো থেকে জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ধাক্কায় রাস্তাঘাট স্তব্ধ হয়ে গেছে এবং বিভিন্ন ভবনের ছাদ ও দেয়ালের অংশ ভেঙে পড়েছে।
মিয়ানমারে ভূমিকম্পের পর পরই দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।