
মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭১৯ জনে দাঁড়িয়েছে। ৪৫২১ জন আহত হয়েছেন ও নিখোঁজ রয়েছেন ৪৪১ জন। ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৩০০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে দেশটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। এর ধাক্কায় রাজধানী নেপিদো, দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের বহু আধুনিক ভবনের পাশাপাশি অনেকগুলো প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির ধ্বংস হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে এ তথ্য জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন জান্তা প্রধান মিন অঙ হ্লাইং।
গত শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুরে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার তীব্র ভূমিকম্পটি হয়। এতে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের এক হিসাব থেকে ধারণা পাওয়া গেছে। মান্দালয় এলাকায় একটি প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় ধসে দুই শিক্ষক ও ৫০ শিশু নিহত হয়েছেন বলে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে।
মিয়ানমারের এই ভূমিকম্পে প্রতিবেশী থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে একটি নির্মাণাধীন ৩৩তলা ভবন ধসে পড়েছে। দেশটিতে ভূমিকম্পে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। ওই বহুতল ভবনের পাহাড় সমান ধ্বংস্তূপে কয়েক ডজন মানুষ আটকা পড়ে আছেন, তাদের মধ্যে মিয়ানমার থেকে যাওয়া নির্মাণ শ্রমিকরাও রয়েছেন।
ভূমিকম্পে মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো সেতু, মহাসড়ক, বিমানবন্দর ও রেলপথ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মানবিক সহায়তার প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে। চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে আগেই দেশটির অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়েছে, এখন মারাত্মক ভূমিকম্পের পর পরিস্থিতি আরও নাজুক আকার ধারণ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ত্রাণ সংস্থাগুলো মিয়ানমারের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে পৌঁছানো শুরু করেছে। সংস্থাগুলো জানিয়েছে, এসব এলাকায় খাবার, পানি ও আশ্রয়ের তীব্র অভাব চলছে।
এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ মানবিকবিষয়ক সংস্থা বলেছে, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে বাসিন্দারা পরিষ্কার পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের মতো নিত্য প্রয়োজন মেটাতে সংগ্রাম করছেন। অপরদিকে জরুরি টিমগুলো জীবিতদের খু্ঁজে বের করা ও তাদের মধ্য প্রাণ-রক্ষাকারী ত্রাণ পৌঁছে দিতে নিরলস পরিশ্রম করছে।
আন্তর্জাতিক রেসকিউ কমিটি (আইআরসি) জানিয়েছে, মান্দালয়ের মতো ভূমিকেন্দ্র উপকেন্দ্রের কাছাকাছি স্থানগুলোতে আশ্রয়, খাবার ও পানি এবং চিকিৎসার সেবার মতো সহায়তা দরকার।