
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ছবি : সংগৃহীত
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সংশোধিত ওয়াক্ফ আইনের বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানিতে এই আইনের বাস্তবায়ন স্থগিত করেছে। গতকাল বুধবার থেকে এই আইনের বিরুদ্ধে করা ৭৩টি পিটিশনের শুনানি শুরু হয়। আজ বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ সংশোধিত ওয়াক্ফ আইন স্থগিতের ঘোষণা দেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা, এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ওয়াক্ফ আইন স্থগিতের ঘোষণায় বলা হয়, পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত ঘোষিত ওয়াকফ সম্পত্তিতে বদল ঘটানো যাবে না। ওয়াকফ বোর্ড বা পর্ষদেও নিয়োগ করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্ট যে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে, তা কেন্দ্রকে মানতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি ৫ মে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, বৃহস্পতিবার শুনানির শুরুতে সওয়াল করেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি জানান, কেন্দ্রের কাছে প্রচুর তথ্য জমা পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বহু জমি ‘ওয়াকফ’ হিসেবে নথিভুক্ত রয়েছে। নিজেদের সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বহু মানুষের।
এরপরই সুপ্রিম কোর্টের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য সময় চায় কেন্দ্র। তার ভিত্তিতে কেন্দ্রকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
নতুন ওয়াকফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে জবাব দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপরই বিচারপতি বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি, এই আইনে কিছু ভালো দিক অবশ্যই রয়েছে। তাই পুরোপুরি স্থগিত করে দেওয়ার কথা কখনোই বলা হয়নি। কিন্তু আমরা চাই না, এখন যা পরিস্থিতি, তা বদলে যাক। বিষয়টি এখনো আদালতে বিচারাধীন। পরিস্থিতি যাতে না বদলায়, সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।’
এর আগে গতকাল বুধবার এই আইনের বিরুদ্ধে করা ৭৩টি পিটিশনের শুনানি শুরু হয়। আজ বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ সংশোধিত ওয়াক্ফ আইন স্থগিতের ঘোষণা দেন। তবে আদালতের এই সিদ্ধান্তের পরও দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে মুসলমানরা দীর্ঘদিন ধর্মীয় বা দানের কাজে ব্যবহৃত সম্পত্তিকে ওয়াকফ হিসেবে দাবি করতে পারে, এমনকি কাগজপত্র না থাকলেও। নতুন আইনে বলা হয়েছে, বিরোধপূর্ণ বা সরকারি জমিতে এটি প্রযোজ্য হবে না।
প্রসঙ্গত, ভারতের বিতর্কিত সংশোধিত ওয়াক্ফ বিলে সম্মতি দিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এর মধ্য দিয়ে বিলটি আইনে পরিণত হয়। তবে এই আইন নিয়ে শুনানিতে রাজি হয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।